ঢাকা ১১:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সালথায় প্রণোদনার পেঁয়াজ বীজে কৃষকের মাথায় হাত

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:১৭:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :: ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় প্রতিবছর প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার মেঃটন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়ে থাকে। সেই লক্ষ্যে প্রতিবছর সরকারিভাবে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে প্রণোদনা হিসেবে পেয়াঁজ বীজ বিতরণ করা হয়। কিন্তু প্রণোদনার পেয়াজ বীজেই কৃষকদের মাথায় হাত ওঠেছ। বিষয়টির সত্যতাও পেয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে । 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি বছরের রবি মৌসুমের আওতায় ১ হাজার ৪৫০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে তাহেরপুরী ও বারি পেয়াঁজ-৪ জাতের পেয়াঁজ বীজ বিতরণ করা হয়েছে। প্রণোদনা হিসেবে এক কেজি করে পেয়াঁজ বীজ বিতরণ করা হয়। এতে প্রণোদনা পাওয়ার কৃষকই ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। 
কৃষকরা বলছেন, এসব বীজের ৫ থেকে ৭% বীজও অঙ্কুরিত হয়নি। এমনকি কোনো কোনো কৃষকের জমিতে অঙ্করিত বীজের হার ০%।

তবে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, ১০-১২% বীজ অঙ্করিত হয়েছে বলে সরেজমিনে প্রমাণ পেয়েছেন। যার হার মোটেও সন্তোষজনক নয় বলে জানান। এসব বীজ বপনের সময় শেষ হওয়াতে বর্তমানে হতাশায় দিন কাটছে কৃষকদের। 

সালথা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনা বীজ পাওয়া কৃষক আরজু মিয়া, রমজান হাওলাদার, কবির কাজী ও শরিফুল হাসান জানান, প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র চাষিদের মাঝে প্রণোদনার এক কেজি বীজ ও সার দেয় কৃষি অফিস। কিন্তু প্রণোদনায় পাওয়া বীজের অঙ্করিতের হার দেখে হতাশ হয়ে পড়েছেন। এউপজেলার কারও বীজ অঙ্করিত হয়নি বলে অনেক কৃষক অভিযোগ করেন। যে বীজ পেয়েছেন তারা, তার কিছুই জ্বালায়নি (অঙ্করিত)। কয়েকদিন পরেই হালি পেয়াঁজ লাগানো শুরু হবে। এখন নতুন করে বীজও পাওয়া যাচ্ছে না বা বুনানোর (বপন) সময়ও শেষ। আমরা এখন কি করবো জানিনা। এই পেয়াঁজ দিয়ে আমাদের সংসার চলে। এ বছর পেয়াঁজ বীজের দাম বেশি হওয়ায় কেনার (ক্রয়ের) ক্ষমতার বাইরে থাকায় অনেক আশা করে উপজেলা থেকে এক কেজি বীজ নেন। কিন্তু তা কিছুই জ্বালায়নি। এসময় ক্ষতিপূরণ দাবী করেন তারা।

কৃষকদের এমন ক্ষতির দায়ভার নিতে চাচ্ছে না সংশ্লিষ্ট উপজেলা কমকর্তা। তাঁরা বিএডিসি কর্মকর্তাদের দায়ী করছেন। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুদর্শন সিকদার বলেন, এক হাজার চারশত পঞ্চাশজন কৃষক পেঁয়াজবীজ পেয়েছেন । তাদের বীজগুলো না গজানোর অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, শূন্য থেকে ১০ শতাংশ বীজের চারা গজিয়েছে। তিনি বলেন, বিএডিসির সরবরাহ করা পেঁয়াজবীজ কৃষকদের দেওয়া হয়েছে।বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে ফরিদপুর জেলা কৃষি পুনর্বাসন ও প্রণোদনা কমিটি একটি তদন্ত দল গঠন করেছে। সুদর্শন সিকদার আরও বলেন, এ বছর সালথায় উপজেলায় সাড়ে ১১ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ রোপণ করা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

সালথায় প্রণোদনার পেঁয়াজ বীজে কৃষকের মাথায় হাত

আপডেট সময় : ০১:১৭:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক :: ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় প্রতিবছর প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার মেঃটন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়ে থাকে। সেই লক্ষ্যে প্রতিবছর সরকারিভাবে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে প্রণোদনা হিসেবে পেয়াঁজ বীজ বিতরণ করা হয়। কিন্তু প্রণোদনার পেয়াজ বীজেই কৃষকদের মাথায় হাত ওঠেছ। বিষয়টির সত্যতাও পেয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে । 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি বছরের রবি মৌসুমের আওতায় ১ হাজার ৪৫০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে তাহেরপুরী ও বারি পেয়াঁজ-৪ জাতের পেয়াঁজ বীজ বিতরণ করা হয়েছে। প্রণোদনা হিসেবে এক কেজি করে পেয়াঁজ বীজ বিতরণ করা হয়। এতে প্রণোদনা পাওয়ার কৃষকই ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। 
কৃষকরা বলছেন, এসব বীজের ৫ থেকে ৭% বীজও অঙ্কুরিত হয়নি। এমনকি কোনো কোনো কৃষকের জমিতে অঙ্করিত বীজের হার ০%।

তবে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, ১০-১২% বীজ অঙ্করিত হয়েছে বলে সরেজমিনে প্রমাণ পেয়েছেন। যার হার মোটেও সন্তোষজনক নয় বলে জানান। এসব বীজ বপনের সময় শেষ হওয়াতে বর্তমানে হতাশায় দিন কাটছে কৃষকদের। 

সালথা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনা বীজ পাওয়া কৃষক আরজু মিয়া, রমজান হাওলাদার, কবির কাজী ও শরিফুল হাসান জানান, প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র চাষিদের মাঝে প্রণোদনার এক কেজি বীজ ও সার দেয় কৃষি অফিস। কিন্তু প্রণোদনায় পাওয়া বীজের অঙ্করিতের হার দেখে হতাশ হয়ে পড়েছেন। এউপজেলার কারও বীজ অঙ্করিত হয়নি বলে অনেক কৃষক অভিযোগ করেন। যে বীজ পেয়েছেন তারা, তার কিছুই জ্বালায়নি (অঙ্করিত)। কয়েকদিন পরেই হালি পেয়াঁজ লাগানো শুরু হবে। এখন নতুন করে বীজও পাওয়া যাচ্ছে না বা বুনানোর (বপন) সময়ও শেষ। আমরা এখন কি করবো জানিনা। এই পেয়াঁজ দিয়ে আমাদের সংসার চলে। এ বছর পেয়াঁজ বীজের দাম বেশি হওয়ায় কেনার (ক্রয়ের) ক্ষমতার বাইরে থাকায় অনেক আশা করে উপজেলা থেকে এক কেজি বীজ নেন। কিন্তু তা কিছুই জ্বালায়নি। এসময় ক্ষতিপূরণ দাবী করেন তারা।

কৃষকদের এমন ক্ষতির দায়ভার নিতে চাচ্ছে না সংশ্লিষ্ট উপজেলা কমকর্তা। তাঁরা বিএডিসি কর্মকর্তাদের দায়ী করছেন। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুদর্শন সিকদার বলেন, এক হাজার চারশত পঞ্চাশজন কৃষক পেঁয়াজবীজ পেয়েছেন । তাদের বীজগুলো না গজানোর অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, শূন্য থেকে ১০ শতাংশ বীজের চারা গজিয়েছে। তিনি বলেন, বিএডিসির সরবরাহ করা পেঁয়াজবীজ কৃষকদের দেওয়া হয়েছে।বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে ফরিদপুর জেলা কৃষি পুনর্বাসন ও প্রণোদনা কমিটি একটি তদন্ত দল গঠন করেছে। সুদর্শন সিকদার আরও বলেন, এ বছর সালথায় উপজেলায় সাড়ে ১১ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ রোপণ করা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।